রাজবাড়িতে যাবার যে পথ, গেন পথের ধারে প্রকান্ড দেয়াল, সেই দেয়ালের একপাশে ব্যাঙেদের পুকুর। সোনা ব্যাং, কোলা ব্যাং, গেছো ব্যাং, মেঠো ব্যাং- সকলেরই বাড়ি সেই পুকুর ধারে। ব্যাঙেদের সর্দার যে বুড়ো ব্যাং, সে থাকে দেয়ালের ধারে, একটা মরা গাছের ফাটলের মধ্যে, আর ভোর হলে সবাইকে ডাক দিয়ে জাগায়- আয় আয় আয়- গ্যাক গ্যাক গ্যাক- দেখ দেখ দেখ- ব্যাং ব্যাং ব্যাং- ব্যাঙাচি।” এই বলে সে অহংকারে গলা ফুলিয়ে জলের মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে, আর ব্যাংগুলো সব যাই যাই যাই- থাক থাক থাক” বলে ঘুম ভেঙে, মুখ ধুয়ে দাঁত মেজে, পুকুর পারের সভায় বসে। একদিন হয়েছে কি, সর্দার ব্যাং ফুর্তির চোটে লাফ দিয়েছে উলটোমুখে। ডিগবাজি খেয়ে- আর পড়বি তো পড়, এক্কেবারে দেয়াল টপকে রাজপথের মধ্যিখানে! রাজা তখন সভায় চলেছেন, সিপাইশাস্ত্রী লোকলস্কর দলবল সব সঙ্গে চলেছে। মোটা মোটা সব নাগরাই জুতো, খটমট ঘ্যাঁচম্যাচ করে ব্যাং বুড়োর মাথার উপর দিয়ে ডাইনে বাঁয়ে সামনে পিছে এমনি রোখ করে চলতে লাগল, যে ভয়ে ব্যাঙের প্রাণ তো যায় যায়।